কলম কথা ডেস্কঃ

নারী’র প্রথম অক্ষরটিই ‘না’। তাই হয়তো একবিংশ শতাব্দীর এই সময়ে এসেও নারীকে শুনতে হয় ‘না’। মানবচক্রের যেই মাধ্যমে আমাদের এই পৃথিবীতে আসা, তার একটি অপার মাধ্যম এই নারী। এই নারী কখনো আপনার মা, কখনো আপনার বোন আবার কখনো স্ত্রী। ধর্মেও আছে নারীর সম্মানের স্থান। হাজার সম্পর্কের মাঝে তাদের সঙ্গে আপনার আমার সম্পর্ক অন্যতম।

নিজেকে অন্যের সুখে হাসতে হাসতে বিলিয়ে দিতে পিছপা হন না এই নারী। তাই হয়তো একাই ভালোবাসে সমস্যা ও সমাধানের হালটি কাঁধে তুলে নিতে। নানা ঘাত-প্রতিঘাত পার করেই চলে এই নারীর জীবন। যার জন্য উৎসর্গ করা যায় বছরের প্রত্যেকটি দিন। তাকে উদ্দেশ্য করে যা-ই করা হয়, তা-ই হয়তো তার করা কাজের কাছে কম। তাই তার উদ্দেশ্য করে আর তাকে সম্মান জানাতে বিশ্বে একটি দিন পালিত হয় নারী দিবস হিসেবে। সেই দিনটি হল ৮ মার্চ।

নারী দিবসের ইতিহাস
মূলত দিবসটি উদযাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মজুরি-বৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকরা। সেই মিছিলে চলে সরকারের লেঠেল বাহিনীর দমন-পীড়ন।

১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে নিউ ইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হয়। ক্লারা ছিলেন জার্মান রাজনীতিবিদ; জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন। এরপর ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে যোগ দিয়েছিলেন। এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বৎসর ৮ মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন।

সিদ্ধান্ত হয়, ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে। দিবসটি পালনে এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতন্ত্রীরা। ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চে নারী দিবস পালিত হয়। বাংলাদেশ ১৯৭৫ সাল থেকে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করছে। বর্তমানে পৃথিবীজুড়েই পালিত হচ্ছে দিনটি, নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করার অভীপ্সা নিয়ে। সেই থেকেই আজ অবধি ৮ মার্চ বিশ্বজুড়ে পালিত হয় ‘বিশ্ব নারী দিবস’।

বাংলাদেশে নারী দিবস
বাংলাদেশে দিনব্যাপী র্যালি আর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হয় বিশ্ব নারী দিবস। এছাড়া নারী দিবসকে ঘিরে বেগুনি রঙের শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ কিংবা নারী তার পছন্দের মতো পোশাকটি পরে দিনটি উদযাপন করে।